ঢাকাবৃহস্পতিবার, ১৩ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ যেভাবে কাজ করে বহির্বিশ্বে

দৈনিক আজকের নিউজ
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪ ৪:৩০ অপরাহ্ণ
শেয়ার:
Link Copied!

র’ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৮ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর। সংস্থার প্রথম প্রধান হিসাবে নিযুক্ত হন রামেশ্বর নাথ কাও আর শঙ্করণ নায়ার হন তার দু-নম্বর অফিসার।
এই দুজন ছাড়াও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো বা আইবি থেকে ২৫০ জনকে রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ে বদলি করা হয়।
পরে, ১৯৭১ সাল থেকে রামনাথ কাও কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরাসরি ‘র’ এজেন্ট বেছে নেওয়ার প্রথা শুরু করেন।
ফলে ‘র’-এ কর্মরত অনেকের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুরা সেখানে চাকরি পেয়ে যান আর মজা করে সংস্থাটিকে ‘রিলেটেড অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ বলা হত।
কিন্তু ১৯৭৩ সালের পর ওই সরাসরি নিয়োগের প্রক্রিয়া বদলে যায়। শুরু হয় সরাসরি নিযুক্ত কর্মকর্তাদের এক কঠিন প্রতিযোগিতা। তাদের বেশ কয়েকটি পরীক্ষা পার করতে হয়।
নীতিন গোখলে তাঁর ‘আরএন কাও, জেন্টলম্যানস্ স্পাইমাস্টার’ বইয়ে লিখেছেন, “প্রথমটি হত মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের ভোর তিনটের মধ্যে একটি জায়গায় আসতে বলা হত। সেখানে পৌঁছানোর পর তাদের অবজেক্টিভ টাইপ টেস্ট দেওয়া হত। যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেন, তাদের ইন্টারভিউ নেওয়া হত। ওই ইন্টারভিউ নিতেন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার এক অফিসার।”
ওই ১৯৭৩ সালে ‘র’-তে যাদের নিয়োগ হয়েছিল, তাদেরই একজন জয়দেব রানাডে অতিরিক্ত সচিব হিসাবে অবসর নেন।
তিনি বলছিলেন, “পরের রাউন্ডে ‘র’-এর সিনিয়র কর্মকর্তা এনএন সন্তুক এবং শঙ্করণ নায়ার ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন। এই পর্যায়টি পাশ করার পরে আমরা মুখোমুখি হই পররাষ্ট্র সচিব, র-এর প্রধান আর এন কাও এবং একজন মনোবিজ্ঞানী সহ ছয় সদস্যের বোর্ডের। আমার সাক্ষাৎকার চলেছিল ৪৫ মিনিট।“
মি. রানাডে দুমাস পরে জানতে পারেন যে তিনি ‘র’-এ চাকরির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর সঙ্গে প্রতাপ হেবলিকর, চক্রু সিনহা ও বিধান রাওয়ালও নির্বাচিত হয়েছিলেন।
‘র’-এর বিশেষ সচিব পদ থেকে অবসর নেওয়া রানা ব্যানার্জী বলছিলেন, “১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে এরকম আরও কয়েকজনকে নেওয়া হয়েছিল ‘র’-এ যাদের নিয়ে স্পেশাল সার্ভিস গঠন করা হয়। পরে অজ্ঞাত কারণে এভাবে নিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।”
”এখন ৯৫ শতাংশেরও বেশি কর্মী ভারতীয় পুলিশ সেবা বা আইপিএস থেকে নির্বাচিত হন এবং অর্থনৈতিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কাজের জন্য কিছু কর্মকর্তাকে কাস্টমস এবং আয়কর বিভাগ থেকে নেওয়া হয়।“

ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬৫ সালে যে ২২ দিনের যুদ্ধ হয়েছিলে, তাতে কোনও দেশই জয়ী হতে পারে নি। ভারত এগিয়ে ছিল ঠিকই, তবে তাদের কাছে এই গোপন তথ্য ছিল না যা থেকে বোঝা সম্ভব যে পাকিস্তানের অস্ত্রের ঘাটতি ঠিক কতটা।
সত্যটা হল ২২শে সেপ্টেম্বর, যেদিন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হল, ততক্ষণে পাকিস্তানের অস্ত্রভাণ্ডার প্রায় ফুরিয়ে এসেছে।
সেই ঘাটতি মিটিয়ে নতুন করে অস্ত্র মজুত করাও সম্ভব ছিল না কারণ আমেরিকা তার আগেই পাকিস্তানে অস্ত্র বিক্রির ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিয়েছে।
ভারতের বহির্দেশীয় গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং বা ‘র’-এর প্রাক্তন প্রধান শঙ্করণ নায়ার তার বই ‘ইনসাইড আইবি অ্যান্ড র: দ্য রোলিং স্টোন দ্যাট গ্যাদার্ড মস’-এ লিখেছেন, তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল জে এন চৌধুরী প্রতিরক্ষামন্ত্রী যশবন্তরাও চৌহানকে জানিয়েছিলেন, “সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারেনি কারণ আমাদের কাছে সঠিক গোয়েন্দা তথ্য ছিল না। এসব তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল অযোগ্য ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ বা আইবির গুপ্তচরদের ওপরে।“

ওই সমালোচনার একটি ফলাফল: নতুন একটি নতুন গোয়েন্দা সংস্থা, রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত, যেটির ওপরে দায়িত্ব পড়ল দেশের বাইরের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।