
ক্রীড়া ডেস্ক, আজকের নিউজ।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে কেবল দুটি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। তবে হেরেছে দুটিতে। সবশেষ আসরে সেমিফাইনালে ভারতের কাছে হেরেই বিদায় নিয়েছিল টিম টাইগার্স। চলতি আসরে নিজেদের আসর শুরুর ম্যাচেই বাংলাদেশ মুখোমুখি হচ্ছে ভারতের। টিম টাইগার্সের সামনে সুযোগ আইসিসির এই টুর্নামেন্টে ভারতের বিপক্ষে প্রথম জেতার সুযোগ। তবে তা কতটুকো কাজে লাগাতে পারবে টিম টাইগার্স প্রশ্ন সেটাই।
বুধবার করাচিতে ‘এ’ গ্রুপের লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির। দ্বিতীয় দিনে দুবাইতে একই গ্রুপে থাকা বাংলাদেশ ও ভারত মুখোমুখি হবে। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল তিনটায় গড়াবে মহারণ।
প্রতিবেশি দেশ হওয়ায় বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। যদিও কাগজে-কলমে শক্তিমত্তায় বাংলাদেশের চেয়ে বেশ এগিয়ে ভারত, এমনকি পরিসংখ্যানেও। তবে আইসিসির ইভেন্টেই ভারতকে হারানোর সুখকর স্মৃতি আছে বাংলাদেশের। তাছাড়া তারুণ্য নির্ভর বাংলাদেশ দল জয়ের জন্যেই মুখিয়ে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই বাংলাদেশ টুর্নামেন্ট খেলতে গেছে। ভারত শক্তিমত্তায় এগিয়ে থাকলেও আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে টাইগারদের।
ব্যাটিংয়ে সৌম্য সরকার ও তানজিদ তামিম ফর্মে আছেন বেশ। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে দারুণ করেছেন সৌম্য। তাছাড়া ভিন্ন ফরম্যাট হলেও সদ্য শেষ হওয়া বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহাকদের একজন তানজিদ তামিম। বড় ম্যাচে তাওহীদ হৃদয় এবং নাজমুল হোসেন শান্তও দারুণ। তাছাড়া অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তো আছেনই ভরসার প্রতীক হয়ে।
বোলিংয়ে বাংলাদেশ দুর্দান্ত, তাসকিন আহমেদ দারুণ ফর্মে আছেন। বিপিএলে ১২ ম্যাচে ২৫ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। পাশাপাশি মোস্তাফিজুর রহমান তো ভারতের বিপক্ষে বরাবরই ভালো করার নজির আছে। পেস ইউনিটে বাংলাদেশের নজরকাড়া সংযোজন নাহিদ রানা। তার গতিতে কিছুটা হলেও ভারত ব্যাটারদের বেগ হতে পারে।
অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাটে-বলে দুটাতেই দারুণ। বিপিএলে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারও জিতেছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ভিন্ন ফরম্যাট হলেও মিরাজ প্রমাণ করেছেন ওয়ানডেতে তিনি কতটা ধারালো। এছাড়া রিশাদ কিংবা নাসুম স্পিনে দুজনই বরাবর ভালো করে আসছেন।
আর তাই দলের সকলের প্রতি আস্থা রাখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ভারতের বিপক্ষে বাড়তি উত্তেজনা থাকলেও তা নিয়ে আপাতত চিন্তিত নয় টিম টাইগার্স। শান্ত বলেছেন, ‘অবশ্য ভারত-বাংলাদেশ মানেই বেশ উত্তেজনা। আমি মনে করি, খেলোয়াড়রা এসব নিয়ে চিন্তিত নয়। কিভাবে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায় সেদিকে তারা মনোযোগী। তারা শুধু মাঠে কতটা শান্ত থাকতে পারে সেটাই ভাবে।’
অন্যদিকে ঘরের মাঠে সম্প্রতি ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছে ভারত। আত্মবিশ্বাস তাই বাড়তি থাকারই কথা ভারতের। ব্যাটিং ইউনিটে শুভমন গিল, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলের মত তারকারা আছেন স্কোয়াডে। পাশাপাশি হার্দিক পান্ডিয়া ও রবীন্দ্র জাদেজারাতো আছেনই।
পেস ইউনিটে অবশ্য জাসপ্রীত বুমরাহকে পাচ্ছে ভারত। আর্শদীপ সিংয়ের সঙ্গী হতে পারেন মোহম্মদ শামি ও হারশীত রানা। স্পিনে কুলদীপ যাদব ও বরুণ চক্রবর্তীরা তো আছেনই।
ব্যাটিং-বোলিংয়ে সামঞ্জস্য বজায় রেখে নিজেদের সেরাটা দিয়ে কাল জিততে চায় ভারত। দলটির অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেছেন, ‘আগামীকাল এখানে কী করতে হবে তা দ্রুত মূল্যায়ন করা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। যদি আমরা দ্রুত মূল্যায়ন করতে পারি এবং দ্রুত আমাদের ব্যাটিং বা বোলিং সামঞ্জস্য করতে পারি তবে তা আমাদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।’
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তাওহীদ হৃদয়, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও নাহিদ রানা।
ভারতের সম্ভাব্য একাদশ: শুভমন গিল, রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল, রিশভ পান্ট, হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, আর্শদীপ সিং, হারশীত রানা, কুলদীপ যাদব/বরুণ চক্রবর্তী, মোহাম্মদ শামি।