
মাত্র দুজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এ কারণে সাধারণ রোগীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না। শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।
বুধবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, টিকিট কাউন্টারে অনেক রোগীর ভিড়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা একাই রোগী দেখছেন। অন্তঃবিভাগে রোগী ভর্তি আছেন ৭৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২০ জন, নারী ৪৩ জন ও শিশু ১৩ জন। এদের ৭ জন রোগীকে বারান্দার মেঝেতে রাখা হয়েছে।
চরধীপুর এলাকা থেকে আসা নারী ওয়ার্ডে ভর্তি লাবনি আক্তার বলেন, ‘আমি তিন দিন আগে পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে এসে ভর্তি হই। কিন্ত আমার ওয়ার্ডে ঠিকমতো ডাক্তার আসেনি। এছাড়া বেশিরভাগ ওষুধ বাহির থেকে কিনেছি।’
কুচাইপট্রি এলাকা থেকে আসা ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি আবু সাইদ বলেন, ‘ডায়রিয়া হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কিন্ত এই হাসপাতালে ডাক্তার নেই বললেই চলে। এভাবে হাসপাতাল টিকে কীভাবে জানি না।’
হাসপাতালের ক্যাশিয়ার জামাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে দুইজন চিকিৎসক চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। আজ বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাফিজুর রহমান স্যার রোগী দেখেছেন। আর মেডিকেল অফিসার আফজাল হোসেন স্যার নাইট করায় আজ আসতে পারেনি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান মিয়া জানান, প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার লোকজনের বসবাস গোসাইরহাট উপজেলায়। জনসংখ্যা হিসেবে হাসপাতালে রোগীদের চাপ থাকে বেশি। ৫০ শয্যা হাসপাতালটিতে ১৭ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র দুইজন। এ ছাড়া ৩১ জন সেবিকার মধ্যে আছেন ২৪ জন। চিকিৎসকের স্বল্পতার কারণে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একা ডে এবং নাইট করতে হচ্ছে তাকে। বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় ৪০০-৪৫০ জন রোগী আসে। অন্তঃবিভাগে রোগী থাকে ৭৫-১০০ জন। ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে কোনো রকমে চিকিৎসাসেবা চালছে। কিন্তু মাত্র দুজন চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতাল চালানো কোনোমতেই সম্ভব নয়। অস্ত্রোপচারের কক্ষে (ওটি) সব ধরনের যন্ত্রপাতি থাকার পরও শৈল্য চিকিৎসক ও অবেদনবিদের অভাবে খুব সাধারণ অস্ত্রোপচারও করা যাচ্ছে না। তবে চিকিৎসক থাকলে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।
এসব বিষয়ে শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন আবুল হাদি মোহাম্মদ শাহ পরান বলেন, ‘অধিকাংশ চিকিৎসক বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সংযুক্ত রয়েছেন। তাদের ফিরিয়ে আনতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করি শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।’