চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শুরুটা ভালো হলো না বাংলাদেশের। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৬ উইকেটের ব্যবধানে হারল শান্তর দল। পুরো ম্যাচে টাইগারদের প্রাপ্তি ছিল কেবল সেঞ্চুরিয়ান তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে জাকের আলীর ইতিহাস গড়া জুটি।
দুবাইতে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) প্রথমে ব্যাট করে ৪৯.৪ ওভারে সব কটি উইকেট হারিয়ে ২২৮ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় ভারত। দলকে জয় এনে দেয়ার পথে ১০১ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দেন শুভমান গিল।
টাইগারদের পক্ষে ৩৮ রান খরচায় সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন রিশাদ হোসেন। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।
এদিন রান তাড়া করতে নেমে আগ্রাসী ব্যাট করেন রোহিত শর্মা। ২৬১ ইনিংসে ১১ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করা এ ব্যাটার দ্রুত গতিতে ছুটছিলেন ফিফটির পথে। তবে তার আগেই তাকে থামিয়ে দেন তাসকিন আহমেদ। ৩৬ বলে ৭ চারের মারে ৪১ রান করে কাভার পয়েন্টে রিশাদের হাতে ক্যাচ দেন ভারত অধিনায়ক। যদিও আরেক প্রান্ত আগলে রেখে ক্রিজে শাসন করতে থাকেন অন্য ওপেনার শুভমান গিল।
তবে টাইগার বোলারদের নৈপুণ্যে পরের তিন ব্যাটার হতে পারেননি তার যোগ্য সঙ্গী। দলীয় ১১২ রানে ভারতের দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন রিশাদ। ৩৮ বলে ২২ রান করে টাইগার লেগ স্পিনারের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন বিরাট কোহলি। চার ওভার পর উইকেটের দেখা পান মোস্তাফিজুর রহমানও। ২৮তম ওভারে তার কাটার মিড অফের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শান্তর হাতে ধরা পড়েন শ্রেয়াস আইয়ার। ১৭ বলে ১৫ রানে থামে তার ইনিংস। এরপর ক্রিজে নেমে সুবিধা করতে পারেননি অক্ষর প্যাটেলও। রিশাদের বলে ছক্কা মারার চেষ্টায় হাওয়ায় ভাসিয়ে ফিরতি ক্যাচ দেন বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান, ১২ বলে ৮ রানে ফেরেন তিনি।
লড়াইটা আরও জমে উঠতো যদি ডিপ মিড উইকেটে লোকেশ রাহুলের ক্যাচটি জাকের না ছাড়তেন। ৩৬.২ ওভারে ভারতের সংগ্রহ তখন ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান। আর রাহুল অপরাজিত ছিলেন ১৯ বলে ৯ রান করে। জীবন পেয়ে শেষ পর্যন্ত ৪৭ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারে ৪১ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তিনি। অন্যদিকে ওপেনিংয়ে নামা শুভমান ১২৯ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে এদিন টস জিতে ব্যাট করতে নেমে তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলী অনিকের ইতিহাসগড়া জুটিতে ভর করে লড়াকু পুঁজি তুলে নেয় বাংলাদেশ। মাত্র ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে তারা পৌঁছে দেন ২২৮ রানে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ ১৫৪ রানের জুটির পথে জাকের ও হৃদয় খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। এদিন জাকের ৬৮ রানে আউট হলেও ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন হৃদয়। ১১৮ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ১০০ রান করেন হৃদয়। শেষদিকে পায়ে ক্র্যাম্প না করলে নিজের ব্যক্তিগত ইনিংস আরও বড় করার পাশাপাশি দলকেও হয়তো আড়াইশ রানে পৌঁছে দিতে পারতেন তিনি।
বল হাতে ভারতের পক্ষে ৫৩ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৫ উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ শামি। ৩১ রান খরচায় হার্শিত রানা ৩ আর ৪৩ রান খরচায় বাকি ২ উইকেট নেন অক্ষর প্যাটেল।